
MBN24 ONLINE : ফরিদা পারভীন গুরুতর অসুস্থ, রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা কামনা লালনগীতি শিল্পী ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থা ভালো নয়, ডায়ালাইসিস করতে গিয়ে শারীরিক জটিলতা তৈরি হওয়ায় আবারও আইসিইউতে নিতে হয়েছে এই শিল্পীকে। অসুস্থতার খবর জানিয়েছেন তার স্বামী যন্ত্রসংগীত শিল্পী গাজী আবদুল হাকিম। তিনি বলেন, “ফরিদার তো প্রায়ই ডায়ালাইসিস করতে হয়, এবার পরপর তিনদিন করতে হয়েছে। ডায়ালাইসিস করতে গিয়ে অসুবিধা হয়, তখন তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। এ নিয়ে তিনবার আইসিউতে ভর্তি করা হল। “একবার কোভিড মহামারীর সময়, ফেব্রুয়ারিতে নিউমোনিয়া হয়েছিল। এবার ডায়ালাইসিস করতে গিয়ে এই সুস্থ হচ্ছে, আবার অসুস্থ হচ্ছে। এইভাবে আর কয়দিন বাঁচবেন তিনি।” ৭০ বছর বয়সী এই শিল্পী শুধু কিডনি সমস্যা নয়, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন দীর্ঘদিন ধরে। ফরিদা পারভীনের পরিবার চান, বিদেশে এই গুণী শিল্পীর উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। আবদুল হাকিম বলেন, “আমাদের চাওয়া, সন্তানদের চাওয়া, ফরিদা পারভীনকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানো হোক। উনি কি শুধু কারো মা, কারো স্ত্রী? উনি তো জাতীয় সম্পদ। আমরা অর্থ সাহায্য চাই না, চাই তার চিকিৎসাটা যেন ভালো হয়। এজন্য সরকারিভাবে বিদেশে চিকিৎসার উদ্যোগ নেওয়া হোক।” চলতি বছরের ফব্রুয়ারিতে ১৩ দিন হাসপাতালের আইসিইউতে ছিলেন ফরিদা পারভীন। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান শুরুর পর লালনসংগীত দিয়ে শ্রোতাদের কাছে পরিচিতি পান ফরিদা পারভীন। সাধক মোকসেদ আলী শাহর কাছে তিনি লালনসংগীতের তালিম নেন। সংগীতাঙ্গনে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন। ২০০৮ সালে জাপান সরকারের ‘ফুকুওয়াকা এশিয়ান কালচার’ পুরস্কার পান তিনি। বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন এই শিল্পী। সেরা প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন ১৯৯৩ সালে। ফরিদা পারভীনের কণ্ঠে লালনের গানের যে চর্চা হয়ে এসেছে গেল পাঁচ দশক ধরে, সেটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে প্রায় ১৬ বছর আগে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘অচিন পাখি সংগীত একাডেমি’। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা, প্রতিষ্ঠানের আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়া, এবং নিজস্ব ভবন না থাকায় এ প্রতিষ্ঠানটিও টিকে থাকার লড়াইয়ে জর্জরিত।